Friday, 20 August 2021

কবিতাঃ যাফিরের জন্মদিনে

    যাফিরের জন্মদিনে
     খাদিজা নাওরীন 

সোনামনি যাফির আমার
একদিন দু'দিন করে,
বড় হওয়ার জন্য এলো
দুটি বছর থেকে সরে!
 
একটু-আধটু করে যাফির
চিনছে পৃথিবী-
একটা সময় আসবে যখন
চিনবে সে সব-ই।
 
আলোর পথে চলবে যাফির
চলবে ভালোর সাথে,
আলোকিত মানুষ হয়ে
ছড়াবে আলো পথে!
 
সঠিক পথের দিকে যাফির
সর্বদা চোখ রাখবে,
ভালোবাসার বহর নিয়ে
আজীবণ থাকবে।
 
আজ জন্মদিনে তোমার জন্য
ডালি সাজাই দোয়ার,
আদর্শ এক মানুষ হও
সোনামনি আমার।
 
 ২১জুন, ২০২১

 

কবিতাঃ আল-আকসা আমাদের

          আল-আকসা আমাদের
              খাদিজা নাওরীন
 
আল-আকসা কারো নয়, আমাদের মুসলমানের,
এ যে প্রথম কিবলা, ভূমি সেতো মিরাজের।
বরকতময় এ ভূমি, কল্যাণের আকর-
কুরআন-হাদিসে তা প্রমাণিত, সম্মানিত এ শহর।
নবী-রাসুলের আবাসস্থল ও হিজরত ভূমি ছিল,
'আল-কুদস' ইসলামি ঐক্যের প্রতীক হলো!
তৃতীয় পবিত্র স্হান মুসলমানের আল-আকসা,
'বায়তুল মুকাদ্দাসের' প্রতি তাই অকৃত্রিম ভালোবাসা।
আল-আকসা মুসলমানের পবিত্র স্হান, পবিত্র শহর,
ইসরাইলের নেই কোনো অধিকার এই শহরের উপর।
উদ্বাস্তু ইহুদিদের হলো বুঝি স্পর্ধা এত্তো,
জানেনা যে ওরা হচ্ছে তৈরি ওমর-খালিদেরা কত্ত!
আল-আকসাকে রঞ্জিত করার বদলা বীরেরা নিবেই,
আল-আকসা'র ইতিহাসে অবিশ্বাসীদের হার থাকবেই।
বায়তুল মুকাদ্দাসের প্রতি টান প্রতি ঈমানী হৃদয়ের,
আল-আকসা কারো নয়, আমাদের মুসলমানের।
১৯.০৫.২০২১

 

চাঁদ রাত

আকাশে ঈদের চাঁদ উঠেছে, আজ 'চাঁদ রাত'। টানা একমাস রোজা পালন শেষে আকাশে শাওয়ালের চাঁদ উঠা মাত্রই রোজাদারদের মনে এক পবিত্র অনুভূতি দোলা দিয়ে যায়। এ যে মহান রবের পক্ষ থেকে দেওয়া এক নেয়ামত ঈদ, মুসলমানদের খুশির দিন।
বিশেষত ঈদের রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতমন্ডিত। হাদিসে এসেছে-আবু উমামা রাদ্বিয়াল্লাল্লাহু হতে বর্ণিত, নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাল্লাম বলেছেন, যে ব‌্যক্তি শুধূমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির লাভের জন্য দুই ঈদের রাত জেগে ইবাদতে মাশগুল হবে, কিয়ামতের কঠিনের দিনেও তার অন্তর মরবে না, যেদিন ভয়ঙ্কর ও বিভীষিকাময় পরিস্থতির কারণে মানুষের অন্তর মারা যাবে। (ইবনু মাজাহ, হাদিস :১৭৮২)
ঈদের এই খুশি ছড়িয়ে পড়ুক পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে, অট্টালিকা থেকে ভাঙা কুড়ে ঘর পর্যন্ত, যেমন করে চাঁদ তার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে সর্বত্র!
"ঈদ মোবারক "
১৪-০৫-২০২১

 

ভালো কথার গুরুত্ত

"একটি ভালো কথা একটি ভালো গাছের মতো, মাটিতে যার বদ্ধমূল শিকড়, আকাশে যার বিস্তৃত শাখা, সবসময় সে দিয়ে যায় ফল আর ফল।" (আল কুরআন ১৪ঃ২৪-২৫)
কি সুন্দর উপমা আল্লাহ তা'লা কুরআনে দিয়েছেন! একটি ভালো কথা একটি ভালো গাছের মতো! সেই গাছটির মতো, যে গাছ তুফানেও টলে না, যে গাছ ছায়া দেয়, ফলে ফলে সুশভিত থাকে বারো মাস! সুবহানাল্লাহ!
একটি ভালো কথার এতই গুণ, যে কথাটি ঐ গাছের মতোই মূল্যবাণ। মানুষের একটি কথাই হতে পারে ঐ গাছটির মতোই শান্তি এবং কল্যাণের বাহক।
সুন্দর কথা বলা একটি শ্রেষ্ঠ মানবিক গুণ। সবার কিন্তু সে গুণ নেই। যারা সুন্দর কথা বলে, সবাই তাকে ভালোবাসে। তার সাথে কথা বলতে কারো ভয় করে না। কারণ, তার সাথে কথা বললে ঝগড়ায় জড়ানোর কোনো আশংকা নেই! সে কটু কথা বলে না, খারাপ কথা বলে না, নিজের জিহ্বাটাকে সে সংযত রাখতে জানে। সুভাষী'র সাথে কথা বললে মানুষের মন প্রশান্তিতে ভরে যায়, সে মানুষকে ভালো কাজ করতে উৎসাহ দেয়, মন্দ কাজ করতে মানা করে!
সুন্দর কথা বলার আসমানি তাকিদ রয়েছে। আল্লাহ বলেন, "মানুষের সাথে ভালো কথা বলো, সুন্দর কথা বলো।" (আল কুরআন ২ঃ৮৩)
আল্লাহ আমাদের সুন্দর কথা বলার তাওফিক দান করুন।
০১-০৫-২০২১

 

কবিতাঃ আত্মশুদ্ধি

         আত্মশুদ্ধি
     খাদিজা নাওরীন 

তোমার রঙে নিজেকে রাঙানোর
আমায় তাওফিক দাও প্রভু,
পাপের সাগরে সাঁতার যেন
কাটিনা আর কভু।
কলুষ-মুক্ত রাখতে এ মনকে
চেষ্টা যেন করি সর্বদা,
ভালো কাজে উৎসাহ ব্যতিত
যেন দেইনা কাউকে বাঁধা!
মানুষের মঙ্গল চাই যেন আমি
ভালোবাসি তোমার সৃষ্টিকে,
সত্য-ন্যায়ের পথ যেন খুঁজি
জীবনের এই বাঁকে বাঁকে।
আমার জিহ্বার আঘাত যেন
কেউ কভু পায়না,
অন্যকে নিয়ে থাকেনা মনে
যেন খারাপ ধারণা।
হিংসা -বিদ্বেষ মন থেকে
দূর করে দাও রব,
তোমার দেওয়া বিধান আমার
হয় যেন গো স-ব!
আমার জন্য সহজ কর
'ক্ষমা 'এই গুণটাকে,
আত্মশুদ্ধির তাওফিক দাও প্রভু
কবুল করে নাও আমাকে!
 
১৯.০৪.২০২১

 

কবিতাঃ স্বাধীনতা

        স্বাধীনতা মানে 
       খাদিজা নাওরীন

স্বাধীনতা মানে এক মুক্ত আকাশ,
বিজয়ের উল্লাসে মাথা তুলে দুর্বাঘাস।
পাখিদের পাখা মেলে ওড়া-ওড়ি,
নির্বিঘ্নে ছুটে থাকা খোকার ঘুড়ি!
ভুলে গিয়ে বিষণ্ন পঁচা অতীত,
স্বাধীনতা মানে এক জাতীয় সংগীত।
ছুটে চলা মৌমাছির গুনগুন ধ্বনি,
কলকল নদীর স্বচ্ছ পানি।
স্বাধীনতা মানে শিশুদের হাসি,
মাঠের কাজে খুব ব্যস্ত চাষী।
বৃদ্ধরা ফিরে পায় নব প্রাণ,
চারিদিকে বয়ে যায় আনন্দের বাণ!
স্বাধীনতা মানে এক স্বাধীন দেশ,
হারিয়ে ফেলা সব হিংসা -বিদ্বেষ।
স্বাধীনতা মানে সবুজের বুকে লাল,
ঘুচে যাওয়া অমানিশার কাল।

২৬.০৩.২০১৭

 

কবিতাঃ শ্রদ্ধা

      শ্রদ্ধা
খাদিজা নাওরীন
 
চনমনে বসন্তের ফুলগুলোতে
কেমন বিষণ্নতা যেন ছেয়েছে,
আজ স্নিগ্ধ সকালের আলোয়
দুঃখ-গৌরব যেন একেঁছে!
তেরশত আটান্ন'র আট ফাল্গুন
সে কি মহাকান্ড ঘটল,
মায়ের ভাষার রাখতে সম্মান
বীর ছেলেরা পথে নামল।
কত রক্ত-প্রাণের বিনিময়ে শেষে
বীরেরা উদ্ধার করল ভাষা,
আজ আমরা নির্ভয়ে তাই
সে ভাষায় মিটাচ্ছি স্বপ্ন -আশা!
ফাল্গুন এলে তাই ফুলের ডালে
শ্রদ্ধা - ভালোবাসা দুলে,
বাঙালির চেতনা শাণিত করে
বীরের জাতি করে তুলে!
২১.০২.২০২১

 

কবিতাঃ ফাল্গুনের প্রথম সকাল

 

            ফাল্গুনের প্রথম সকাল
              খাদিজা নাওরীন
 
ফাল্গুনের প্রথম সকাল আজ মেলেছে চোখ,
সূর্য ছড়ায়েছে আলো চিরে কুয়াশার বুক।
কত-শত পাখিদের মিষ্টি -মধুর আনাগোনা,
বসন্তের এ যেন যতনে ভালবাসা বোনা!
শীতার্ত প্রকৃতিতে আজ যে চনমনে ভাব,
ফুলগুলোও করেছে আরো উজ্জ্বলতা লাভ!
আম-লিচুদের মুকুলগুলো মনের সুখে ভাসে,
প্রকৃতির এই চঞ্চলতায় বসন্ত হাসে।
দখিন হাওয়ায় পাল তুলেছে ফাগুনেরই রুপ,
এমন দেখে ভীষণ লাজে শীত করেছে চুপ।
চুপি চুপি কামনা করছে বসন্ত ও শীত,
প্রকৃতির মতো, মানব মনের হিংস্রতার নড়ুক ভীত।
                     ১৪/০২/২০২০
       

Saturday, 14 August 2021

যাফিরের বেড়ে উঠা -২

 

যাফিরের বয়স ১৯ মাস চলছে। আমার চোখের সামনেই ওর বিকাশ হচ্ছে প্রতিনিয়ত, আর আমি প্রাণ ভরে উপভোগ করছি তা! ওর সাথে সাথে আমার "মা" সত্তাটাও বড় হচ্ছে! আমি নিজেকে নতুন নতুন ভাবে আবিষ্কার করি কিভাবে একজন ভালো মা হওয়া যায়, সন্তানের কাছে আদর্শ মা হতে পারি!
আমি যাফিরকে কখনো ছোট ভাবি না, বড়দের সাথে যেরকম কথা বলি, যাফিরের সাথেও সেরকম বলি, বরং তার চেয়েও বেশি। কারণ পাছে ভয় থাকে, আমার কোনো ভুল যদি ও আয়ত্ত করে নেয়!
ওর সাথে আমি গল্প করি, খেলি, প্রাণ খুলে হাসি! যাফিরের আধো আধো কথার বহরে আমি ইচ্ছেমতো লুটোপুটি খাই। ওর সাথে সময় কাটাতে আমি ভীষণ ভালোবাসি।
আমি চাই, আমার সন্তানকে একটি সুন্দর, নিরাপদ, নির্ভয়, ভালোবাসা পূর্ণ শৈশব দিতে, যাতে সে প্রাণ ভরে উপভোগ করতে পারে এই জীবন সকাল।
ভালোবাসায় বড় হোক পৃথিবীর প্রতিটি শিশু।

Friday, 13 August 2021

কবিতাঃ শুভ জন্মদিন

 

     শুভ জন্মদিন 
    খাদিজা নাওরীন
 
দেখো এ সময় সেজেছে আজ-
ঐ আকাশে তাঁরাদের সাজ,
মিটিমিটি জোনাকি জ্বলে,
তোমায় জানাবে বলে-
"শুভ জন্মদিন"!
ঠান্ডা ঠান্ডা এ বাতাসে ভাসে,
সব সুর যেন একত্রে হাসে,
কুলুকুলু সুরে নদী চলছে,
আর শোনো, পাখিরা বলছে
" শুভ জন্মদিন "!
অগোছালো অশান্ত এ মন আমার
শুধু বলে যায় কথা তোমার,
সারাটি জীবন যেন এক সাথে চলি,
অগোছালো ভাবে দিয়েছি বলি-
"শুভ জন্মদিন "!
২৭.১১.২০২০

কবিতাঃ নিষ্ঠুরতা বিদায় হও

 

নিষ্ঠুরতা বিদায় হও
  খাদিজা নাওরীন
 
নিষ্ঠুরতা তুমি চির বিদায় নিলে
এ পৃথিবী ফিরে পাবে কোমলতা,
ছোট্ট শিশুরা হবে না এতিম-
সন্তান হারাবেনা কোনো মাতা!
দেখবে স্বপ্ন নির্ভয়ে সবাই
বাড়বে প্রাণ-চঞ্চল কোলাহল,
নিভবেনা হিংস্রতায় কোনো প্রাণ
আর থাকবেনা কোনো অচল।
নিষ্টুরতা বিদায় হয়ে যাও
তবে আলোময় হবে ধরণী,
শিশুর কান্নারা ক্ষত করবেনা বুক
আর ঝলমল করবে ঐশী বাণী!
১৬.১০.২০২০

যাফিরের বেড়ে উঠা

 

        আমার যাফির এখন ভালোভাবেই হাটতে শিখেছে, আলহামদুলিল্লাহ! ও যখন হাঁটে, আমার প্রাণটা তখন পুলকিত হয়ে ওঠে, ভালোলাগায় ভরে যায় আমার হৃদয়! আমি অপলক তাকিয়ে থাকি ওর দিকে! আসলে আমার মনে হচ্ছে কি, ছেলেটার সাথে সাথে আমার মনটারও বিকাশ ঘটছে!
        বড় হওয়ার পাশাপাশি যাফিরের চঞ্চলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কখনো কখনো যাফিরের দুষ্টুমি সামলাতে গিয়ে আমাকে হিমশিম খেতে হয়! কিন্তু আমি রাগ করিনা আমার ছোট্ট বাচ্চাটার উপর, রাগ করতে আমার ভীষণ ভয় হয়! কারণ, ওতো এখনো কিছু বোঝেনা! এবার আসি আসল কথায়--
        আমি বাচ্চাদের বিষয় নিয়ে পড়তে খুব আগ্রহী, যখনই বাচ্চাদের নিয়ে কোনো লেখা চোখের সামনে পড়ে, পড়তে ভুল করিনা, ভালোই লাগে পড়তে। বাচ্চাদের নিয়ে ভাবতেও ভালো লাগে!
        মানুষ এখন অনেক সচেতন। সবাই শিশুশ্রম, শিশু নির্যাতন...... ইত্যাদিকে না বলতে শিখেছে। কিন্তু, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমি খুব মর্মাহত হই। কখনো ফেসবুকের কোনো ভাইরাল ভিডিওতে চোখ আটকে যায়, সেখানে মা বেত হাতে নিয়ে তাঁর আড়াই বছরের শিশুকে লিখা শিখাচ্ছেন, বাচ্চাটি কাঁদতে কাঁদতে অস্তির! সে লিখতে চাচ্ছে না, মা আবার বাচ্চাটিকে মারছেন......., এসব তো গেল ফেসবুকের কথা.....
        যখন স্কুলে যেতাম, বান্ধবীদের গল্পে উঠে আসত মা-বাবাকে লুকানোর নানা কাহিনী! অর্থাৎ মা-বাবাকে ভয় পাওয়া!
        আবার বাস্তবে অনেক মাকে দেখেছি যে, তিনি তাঁর ছোট্ট বাচ্চাটাকে দরজা আটকে পিঠাচ্ছেন, তাঁর কারণ দুষ্টুমি! কেউ আবার বাচ্চাকে মারার কারণ জানতে চাইলে বলেন, "আমার বাচ্চা, আমি যা ইচ্ছা করব!" তখন আমার মনে প্রশ্ন জাগে, বাচ্চাটা বড় হয়ে যখন দোয়া করবে, "রাব্বিরহাম হুমা........" তখন এর কি অর্থ দাঁড়াবে!
       অবশ্য আমি বাচ্চাদের শাসনের বিপক্ষে না, তবে নির্যাতনের বিপক্ষে। বাচ্চাদের শাসন হবে আদরের, কঠোরতার না।
       কোনো কোনো মা আছেন, যারা নিজের রাগ তাদের ছোট্ট, অবুঝ বাচ্চার উপর ঝাড়েন। এতে বাচ্চার কোমল মনটার উপর কি প্রভাব পড়ছে তা তাঁদের একবারও ভাবায় না!
       বাচ্চাদের প্রথম এবং শেষ আশ্রয় তাঁর বাবা-মা। সেই বাবা-মাকে যদি একটি বাচ্চা ভয় পায়, তবে সে বাচ্চার মনোজগত কিভাবে পরিপূর্ণ হতে পারে!
       ভালো থাকুক পৃথিবীর প্রতিটি শিশু, ভালো থাকুক আমার শিশু, "ভালো থাকুক আশপাশের শিশুগুলোও", এই ভাবনার উদয় হোক সব বাবা-মার। প্রাণ ভরে শিশুরা উপভোগ করুক এই জীবন-সকাল!
       শিশুরা ভালোবাসায় বড়ো হোক, অবহেলায় নয়। তাঁরা ভালো শিখুক, মন্দকে মন্দ বলুক, ঘৃণাকে ঘৃণা করুক। প্রতিটি শিশুর জীবন সুন্দর হোক।
১৫.১০.২০২০

কবিতাঃ কালোয় আবৃত আজ

 

কালোয় আবৃত আজ
  খাদিজা নাওরীন
 
ভয়ে আছি, কিভাবে থাকবো নির্ভয়ে?
নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি কালো দিয়ে!
মেয়ে বিহীন এ পৃথিবী চলে যদি,
শেষ করে দাও মেয়ে সব সূর্য ওঠা অবধি!
নয়তো মোদের সহয পথকে ছাড়ো,
সবাই অপরাধীর বিরুদ্ধে আজ লড়ো!
সুন্দর পৃথিবীটা সবার জন্য মেয়েরা জানুক,
অপরাধীর প্রতি সবাই ঘৃণ্য দৃষ্টি হানুক!
০৬. ১০. ২০২০

কবিতাঃ যাফির এখন নানাবাড়ি

যাফির এখন নানাবাড়ি
  খাদিজা নাওরীন
 
কাটছে সময় মজায় মজায়
যাফির সোনার এখন,
খুশিতে মন যায় ভরে যায়
আসে নানাবাড়ি যখন!
মামা, খালা, নানুমণি এবং
নানা ভাইয়ার সাথে,
হেসে-খেলে-দুষ্টুমিতে
সময় কেটে যাচ্ছে তাতে!
নানা ভাইয়ের সাথে যাফির
গতদিনে দেখেছে সূর্যোদয়,
দেখল যাফির প্রকৃতিটা
-কত মায়াময়!
পাহাড়-নদী-গাছপালা সব
ডাকে নানা-নাতিকে,
ভালোবাসায় থাকো বেঁচে-
বলে দুজনকে!
তাইতো তারা আপণ মনে
দাপিয়ে বেড়াচ্ছে,
মহান প্রভুর কৃতজ্ঞতা
স্বীকার করছে।
দেখছে যাফির রোদ-মেঘের
মিষ্টি-মধুর আনাড়ি,
আমার যাফির পাখি আছে
এখন নানাবাড়ি।
০৪.১০.২০২০

 

Thursday, 5 August 2021

কবিতাঃ প্রত্যাশার ঈদ

 প্রত্যাশার ঈদ
খাদিজা নাওরীন

ঈদ হলো সমতা আর ভালোবাসার,
ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে প্রাণ খুলে হাসার।
ঈদ হবে সকলের নয় শুধু ধনীদের,
ঈদের ছোঁয়া লাগবে গায়ে পৃথিবীর পথিকের।
কুঠির আর অট্টালিকার ব্যবধান যাবে ঘুচে,
চাঁদ তার আলো যেভাবে ছড়িয়েছে।
প্রেমের আলোয় আলোকিত হবে সব প্রাণ,
শান্তির ফোয়ারায় ঘটুক দুখের অবসান।
ভালোবাসা ছাড়া যে সমতার স্হান নেই,
প্রত্যাশার ঈদ হোক চাওয়া শুধু এইটাই।
খাদিজা নাওরীন
২৯ জুলাই, ২০২০

কবিতাঃ ভালোবাসার দুটি বছর

 ভালোবাসার দুটি বছর
    খাদিজা নাওরীন
ভালোলাগা- ভালোবাসা- পাশে থাকা
অথবা অভিমানে আরো ভালোবাসা!
ঝড়- ঝঞ্ঝা কিংবা কষ্টের হাতছানিতে
দু'জনে ভরসায় আকঁড়ে থাকা!
গুটি গুটি পায়ে দুটি বছর মাড়িয়ে
আজ রেখেছি তিনটি বছরে পা।
ছোট্ট এ সময়টায় মনে হয়-
দুজন দুজনের ছিলাম চির পরিচিত!
প্রিয় যাফির সোনা এখন,
আমাদের সবচেয়ে বড় উপহার।
- আমাদের নিঃশ্বাস সেতো!
তাকে নিয়েই তো ব্যস্ত সময় দুজনের।
সে যে কি ভালো লাগা!
তাঁর সাথে সাথেই তো আমরা
বড় হচ্ছি প্রতিনিয়ত।
কিছু কালো থাবা, এটা কিছুই নয়
আমাদের এই চেনা দুজনের জন্য।
এই বিশাল আকাশ, রাতের চাঁদ-তারা,
বহমান নদী ও সবুজ ঘাস দেখে দেখে
আমরা কাটিয়ে দিতে পারবো যে
যুগ থেকে যুগান্তর!
এটা যে আমাদের বিশ্বাসের ভালোবাসা।
২০ জুলাই, ২০২০

কবিতাঃ বর্ষার বাস্তবতা

         বর্ষার বাস্তবতা
খাদিজা নাওরীন

বর্ষার এই মৌসুমে দিন-রাত বৃষ্টি ছন্দে
সোঁদা মাটির ঘ্রাণ কিংবা কাঠালের গন্ধে,
বর্ষা নাকি শীত কোনটা ভালো এই দ্বন্ধে,
হারিয়ে যাই বাস্তবতার কাছে!
রঙিন ছাতাটা পাশে রেখে দু হাত মেলে
অনায়াসেই বৃষ্টি সম্ভোধন চলে,
ভুনা খিচুড়ি বা চায়ের কাপের দলে
জীবনের পাওয়া গুলে থাকে পাছে!
বড় একটি কলাপাতায় আটকিয়ে বৃষ্টি
এই দিনটা থাকলে বেঁচে ইতিহাস হবে সৃষ্টি
ভাঙা বেড়াটার দিকে যদি পড়ে ধনীর সুদৃষ্টি,
ভিজে যাবার ভয় তবে কমবে কিছুটা!
জীবন থমকে আছে কোথাও হয়তো
সুখি মনটাতেও হারিয়ে যাওয়া কষ্ট-নয়তো
বন্য প্রাণিটাও খুঁজছে একটু আশ্রয় হয়তো,
বাস্তবতায় হারিয়ে যায় আমার ভাবনাটা!
১২.০৭.২০২০

কবিতাঃ আজ যাফিরের জন্মদিন

 আজ যাফিরের জন্মদিন
খাদিজা নাওরীন

উছলে পড়ছে আবেগ আমার আজ,
কথার মাঝে হারিয়ে গেছে কথা
-আর কাজের মাঝে কাজ!
ছোট্ট বাবুটাকে সেদিন কোলে নিলাম,
কপালে তার আলতো করে চুম দিলাম।
ছোট্ট, ছোট্ট সে যে খুব,
ভালোবাসার গভীরে দিয়েছিলাম ডুব।
একুশ তম দিনে বাবুর আকিকা ছিলো,
"যাফির আবদুল্লাহ চৌধুরী " নাম রাখা হলো।
অল্প অল্প করে যাফির বড় হতে লাগলো,
মনটা আমার তার সাথে ছুটতে থাকলো।
মা-ছেলের যাচ্ছে কেটে ভালোবাসার প্রহর,
কিভাবে যে কেটে গেল একটি বছর!
যাফির এখন হাঁটা শেখার জোরসে চর্চায় আছে,
ডাকলে তাকে হামাগুড়ি দিয়ে আসে কাছে।
ভালোবেসে "মা..ম" ডাকে যাফির আমাকে,
আজ যে তাঁর জন্মদিন বলি সবাইকে!
২১.০৬.২০২০

কবিতাঃ খোকন সোনার ঘুম

      খোকন সোনার ঘুম
খাদিজা নাওরীন

খোকন আমার যেই ঘুমালো
ঘরটা হলো চুপ,
জাম্বুরা গাছের বুদ্ধি যেন
পেয়ে গেলো লোপ!
ঝরঝরিয়ে ফুলগুলো তাঁর-
ঝরাচ্ছে সে খুব,
ধুলিস্নাত একটু হতে
চড়ুই পাখির লোভ!
খোকন আমার উঠবে জেগে
-পাছে এই ভয়,
আকাশটাকে মেঘগুলো
করে ফেলছে জয়।
এত্ত এত্ত ভালোলাগা খুঁজে ফেরার
সময় আমার কই!
এই তো আমার জাগলো খোকা
তাকে নিয়েই হই চই!
২৯.০৩.২০২০
May be an image of 1 person

কবিতাঃ রমজানের প্রত্যাশা

 রমজানের প্রত্যাশা
খাদিজা নাওরীন

রমজান নিয়ে এলো রহমত-শান্তি,
দূর হয়ে যাক না জীবনের ভ্রান্তি।
শুদ্ধতায় ছুয়ে যাক হৃদয়-হৃদয়,
খেলা করুক চারিদিকে নম্রতা-বিজয়।
রমজান নিয়ে এলো তাকওয়ার টান,
পাওয়া যাবে সেইতো জান্নাতি ঘ্রাণ।
ধুয়ে মুছে মনের পঙ্কিলতা সকল,
দূর হোক, দূর হোক অন্যায়ের ধকল।
রমজান নিয়ে এলো ভালোবাসা-
তারই আলোয় কেটে যাক অমাবস্যা।
পবিত্রতার জোয়ার দেখে যেন চোখ,
রমজানের আলোয় মন আলোকিত হোক।
২৩.০৪.২০২০

কবিতা : ঈদের চাঁদ

        ঈদের চাঁদ    খাদিজা নাওরীন ঈদের ঘোষণা দিল ঐ চাঁদ উঠে আকাশে, খুশির জোয়ার চলছে তাই  বাতাসে- বাতাসে। ঐ ঈদের চাঁদে যত খুশি লুকানো! প্রকা...